ঢাকা ০১:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ট্রেন মিস করা বিএনপির রাজনীতির গন্তব্য

  • লেখকের নাম
  • আপডেটের সময় ০৮:১১:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • 44

বিএনপির রাজনৈতিক গন্তব্য

শেখর দত্ত

 

৭ জানুয়ারি ২০২৪ দ্বাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনের আগে বিএনপি ‘সরকার পতন’-এর একদফা সামনে রেখে যুদ্ধংদেহী উগ্রতা নিয়ে মাঠে নেমেছিল। নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি সামনে রাখলেও দলটি সেই সরকারের কোনো রূপরেখা জনগণের সামনে দিতে পারেনি। পারবে কেমন করে! সেই পদ্ধতিতে প্রথম পেরেক থেকে শেষ পেরেক পুঁতেছিল তো সেই দলই। প্রথম পেরেকটি পোঁতে ২০০১ সালের লতিফুর রহমানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আর শেষ পেরেক পুঁতেছে ২০০৬ সালে পুতুল ইয়াজউদ্দিন সরকারকে সামনে রেখে। এই বিষয়গুলো ধামাচাপা দিতেই বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা দেয়নি। দলটি নিয়মতান্ত্রিক পথে না গিয়ে যায় সরকার পতনের দাবি সামনে রেখে নির্বাচন ভণ্ডুলের সর্বনাশা লাইনে।

বিস্ময় ও হতবাক হওয়ার মতো বিষয় হচ্ছে, বিএনপির প্রধান নেতা তারেক রহমান, যাকে বলা হচ্ছে ‘দেশনায়ক’, তিনিই পালিয়ে রয়েছেন লন্ডনে। বহাল তবিয়তে সেখানে থেকে জনগণ ও নেতা-কর্মীদের মনমেজাজ না বুঝে আদেশ-নির্দেশে সর্বনাশা সব করতে তৎপর থেকেছেন। ফলে যা হবার তাই হয়েছে। বাস্তবে যে আগুনসন্ত্রাস দিয়ে বিএনপি নির্বাচন ভণ্ডুল করতে চেয়েছিল, সেই আগুনেই ২০১৪ সালের নির্বাচন-পরবর্তী সময়ের মতো এখন দগ্ধ হচ্ছে বিএনপি। এটা কার না জানা যে, সরকারকে গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে সরিয়ে জাতীয় ঐকমত্যের সরকার প্রতিষ্ঠা কিংবা বিদ্যমান বাস্তবতায় সংবিধান বহির্ভূত শক্তিকে ক্ষমতায় আনা যে কঠিনতম কাজ, তা নিজ কৃতকর্মে অভিযুক্ত ও শাস্তিপ্রাপ্ত তারেক রহমানের বুঝতে পারা সম্ভব ছিল না। শুরু থেকেই বিএনপির ‘দেশনায়ক’ রাজনীতিতে অপরিপক্ব, অবিবেচক ও অপরিণামদর্শী।

একটু খেয়াল করলেই স্মরণে আসবে যে, নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণার পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজি হাবিবুল আওয়াল বলেছিলেন, ‘নির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপিকে বার বার অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু দলটি রাজি হয়নি।… তবে বিএনপি নির্বাচনে যোগ দিতে চাইলে আগামী সংসদ নির্বাচন পুনঃতফসিল করা যেতে পারে।’ বিএনপি সেই অপশন গ্রহণ করেনি, নির্বাচন বয়কট করেছে। বিএনপি নেতৃত্বের ধারণা ছিল, একদিকে সমাবেশ আর অন্যদিকে নাশকতা যতটা করা যাবে, ততই বিদেশিরা নাক গলাবে। তাতে অস্থিরতা-অরাজকতা, অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করা সম্ভব হবে। নাশকতার বিষয়টি যেহেতু গোপন, তাই সরকারের ওপর দোষ চাপানোরও সুযোগ পাওয়া যাবে। ঘোলা পানিতে শিকার করা মৎসটা হবে তাদের!

বিএনপির আরও একটি হিসাবে বড় ভুল ছিল। বিএনপি মনে করেছিল, বয়কট করলে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে না। অপরদিকে নাশকতাজনিত ভয়ভীতিতে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে আসবে না। খুবই কম ভোট পড়বে। নির্বাচন হাস্যকর হবে। বিদেশিদের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না নতুন সরকার। স্বীকৃতি নিয়ে বিপাকে পড়বে। রাজনৈতিক সংকট শিখরে উঠবে। সেই সুযোগে বিএনপি আপসহীন শক্তিরূপে জনগণের হৃদয়মন জয় করে নেবে। বিধ্বস্ত বিএনপি নবরূপে রাজনীতির মাঠে আসর জেঁকে বসবে।

বিএনপির এই হিসাব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক চালে তছনছ করে দিয়েছেন। ধারণা করি দলে বিভক্তি-বিবাদ বাড়বে বিবেচনায় নিয়েও দলীয় নেতাদের বিদ্রোহী হয়ে দলের প্রতীকের বিরুদ্ধে নির্বাচন করার সুযোগ করে দিয়েছেন। রাজনীতিতে আশু লাভটাই বড়। ফলে এক ঢিলে দুই পাখি মরেছে। বিভিন্ন আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ভোট হওয়ায় বিএনপির হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিয়েছেন আর অন্যদিকে জনগণকে দিয়ে তৃণমূলে প্রকৃত জনপ্রতিনিধি বের করে এনেছেন। এই কৌশল গ্রহণের ভেতর দিয়ে দেশেরও লাভ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুঝিয়ে দিয়েছেন, জনগণের পক্ষে কাজ না করলে, জনগণ পক্ষে না থাকলে এমপি নির্বাচিত হওয়া অসম্ভব।

নির্বাচনের পরও বিএনপি নেতারা ‘পাগল’ নয়তো ‘শিশু’র মতো কথাবার্তা বলছেন, আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে যাচ্ছেন। কখনো মনে হচ্ছে কথা ও কাজ অবুঝ বালকের মতো, আবার কখনো মনে হচ্ছে প্রলাপ বকে চলেছেন, পাগলামি করছেন। নির্বাচনের পর দিন রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের অফিসে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান বলেছেন, আওয়ামী লীগের নাকি ‘নৈতিক পরাজয়’ হয়েছে! তিনি আরও বলেছেন, ‘সরকারকে বিদায় নিতে হবে।’ ‘কারও গায়ে হাত দেবে না বিএনপি’ এমন মন্তব্য করে বলেছেন, ‘জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক পন্থায় আন্দোলন চালিয়ে যাবে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো।’

বিএনপি নেতা যখন এসব বললেন তখন আওয়ামী লীগ ছিল বিজয়ের আনন্দে। বাস্তবে বিগত ১৫ বছরে দৃশ্যমান উন্নয়ন ও ডিজিটাল দেশ হওয়ার সুফল জনগণ পাচ্ছে বিধায় আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতা-কর্মী-সমর্থক ও জনগণ রয়েছেন সাফল্য ও অর্জনের আনন্দের চূড়ায়। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে শত চেষ্টা করেও বিএনপি নির্বাচন ভণ্ডুল করতে না পারায় ওই আনন্দ ছিল আকাশচুম্বি। বিজয়ী দূরদর্শী নেত্রী শেখ হাসিনা বিজয় মিছিল করতে যদি মানা না করতেন, তবে বিএনপি নেতৃত্ব দেখতে পারতেন, আওয়ামী লীগের ‘নৈতিক পরাজয়’ হয়েছে নাকি সত্যিকারের বিজয় হয়েছে। নৈতিক বিজয় দেখাতে বিজয় মিছিল করতে না দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা বিএনপিকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন।

বিএনপি বলছে দলটি ‘কারও গায়ে হাত’ দেয় না, ‘শান্তিপূর্ণভাবে সরকার পতনের আন্দোলন’ চালিয়ে যাবে। কথাটা শুনেই এমন প্রবাদ মনে পড়ে: ঠাকুর ঘরে কে রে আমি কলা খাই না। বলুন তো বিএনপি নেতারা, আপনাদের প্রতিষ্ঠাতা নেতা সেনাশাসক জিয়া ক্যু-পাল্টা ক্যু খেলায় কার কার গায়ে হাত দিয়েছিলেন, কতটা রক্ত ঝরিয়েছিলেন! হত্যা আর ক্যুয়ের রাজনীতির ধারা শুরু করেছিলেন তো তিনিই। অপর সেনা স্বৈরশাসক এরশাদবিরোধী যুগপৎ আন্দোলন ছিল হত্যা-ক্যু, প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অন্দোলন।

ওই আন্দোলনে শামিল থেকে বিএনপি সুযোগ পেয়েছিল জিয়ার হত্যা-ক্যু ও প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সামরিক শাসনের অপশাসনের প্রায়শ্চিত্ত করার। কিন্তু খালেদা জিয়া-তারেক জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে সক্ষম হয়নি। কেন না কয়লা ধুলেও ময়লা যায় না। পরবর্তীতে খালেদা জিয়ার আমলে লালবাগের সাত খুন এবং খালেদা-নিজামির শাসনামলে কিবরিয়া, আহসানউল্লাহ মাস্টারসহ রাজনীতিক-বুদ্ধিজীবী খুন হওয়ার ঘটনা আজও জনগণ ভুলে যায় নাই। কোটালীপাড়ায় বোমা পুঁতে রাখা হয়েছিল কেন? বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে গ্রেনেড হামলা? জননেত্রী শেখ হাসিনাকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে চেয়েছিল বিএনপি। তারেক-বাবর-সালাম জুটি তথা হাওয়া ভবনকে ভুলবে না জনগণ।

বলা হয়েছিল বাংলাভাই মিডিয়ার সৃষ্টি। বাংলাভাই আর মুফতি গংদের লেলিয়ে দিয়ে সিরিজ বোমা হামলা থেকে শুরু করে ব্রিটিশ হাইকমিশনারকে পর্যন্ত মারতে চেয়েছিল বিএনপি। ২০১৪ সালের নির্বাচন-পূর্ব সময়ে আন্দোলনের নামে আগুনসন্ত্রাসে কতজন প্রাণ হারিয়েছিলেন, তা মনে করুন না বিএনপি নেতারা! এখন আপনারা বলছেন কারও গায়ে হাত দেবেন না। মানবাধিকার-গণতন্ত্র নিয়ে চেঁচামেচি করছেন। বিদেশিদের উসকে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

বিএনপি দলটি প্রকাশ্যে বলেছে , ‘কারও গায়ে হাত দেবে না।’ ‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলবে।’ কিন্তু বাস্তবে বিএনপি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পথ ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সম্পূর্ণ পরিত্যাগ করেছে। সাংবিধানিক শাসন যখন বলবৎ থাকে, তখন বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের অর্থ দাঁড়ায় সংসদের ভেতরে-বাইরে আন্দোলন, ‘স্যাডো কেবিনেট’ গঠন করে সরকারের পাল্টা রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক কর্মসূচি প্রদান এবং ৫ বছর পরে নির্বাচনে অংশ নেওয়া। কিন্তু বিএনপি নীতি-কৌশল নিয়েছে, নির্বাচনের আগেই সরকারের পতন ঘটানো। এই অবস্থায় প্রশ্ন হলো, বিএনপি ‘মুখে শেখ ফরিদ বগলে ইট’ রাখছে না তো! ধারাবাহিক ব্যর্থতার প্রেক্ষাপটে বিএনপি যদি আগের মতোই রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে এগোতে থাকে, তবে তা হবে আগুন নিয়ে খেলারই নামান্তর।

বিগত ৬ ফেব্রুয়ারি বিএনপি রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে ‘সরকারের ব্যর্থতা’র তীব্র সমালোচনা করে বলেছে, সরকার নতজানু পররাষ্ট্র নীতি গ্রহণ করছে এবং তা স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হুমকির সম্মুখীন। এখানেও জিয়া ও খালেদা জিয়ার আমলের ইতিহাস ভুলে বিএনপি আগুন উসকে দিতে সচেষ্ট থাকছে। ইতিহাস বলে ১৯৭৮ সালে মিয়ানমার সেনা সরকার ‘বহিরাগত তাড়ানো’র নামে ‘অপারেশন কিং ড্রাগন’-এর মাধ্যমে হত্যা, ধর্ষণ, গ্রাম ধ্বংস, জমি কেড়ে নেওয়া প্রভৃতি শুরু করে। তখন নির্যাতিত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ শুরু করে। পরবর্তীতে ১৯৯১ সালে শুরু করে ‘অপারেশন ক্লিন অ্যান্ড বিউটিফুল’ অপারেশন। ৯ জুলাই ১৯৯২ দৈনিকগুলোর খরবে জানা যায় ২ লাখ ৭০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। অখাদ্য খেয়ে রোগে কত রোহিঙ্গা শরণার্থী মারা গিয়েছিল? ওই দুই সময়ে কারা ছিল ক্ষমতায়- বলুন না বিএনপি নেতারা!

সেনাশাসক জিয়া এবং প্রধানমন্ত্রী খালেদা তখন সফল নাকি ব্যর্থ ছিল! নতজানু পররাষ্ট্র নিয়ে কোনো কথা বিএনপির নেতাদের মুখে মানায় না। খালেদা জিয়ার প্রধানমন্ত্রিত্বকালে সেপ্টেম্বর ১৯৯২ ভারত শুরু করে ‘অপারেশন পুশব্যাক’। ২৯ সেপ্টেম্বর বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা এক বিবৃতিতে অপারেশন পুশব্যাক সম্পর্কে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। তখন কি করেছিল সরকার! নতজানু কতটুকু হয়েছিল, তা কি মনে করতে পারেন বিএনপি নেতারা! ক্ষমতায় থাকলে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব আর বিরোধী দলে থাকলে বিরোধিতা এবং এমনকি ‘ফেনী পর্যন্ত ভারত নিয়ে যাবে’ বলা কোন্ ধরনের দ্বিমুখীনতা!

বাস্তবে পাকিস্তানি আমলে পরিত্যক্ত ভাবাদর্শ নিয়ে গড়া দল বিএনপি নির্বাচনী ট্রেন মিস করে বিপদে পড়ে আয়নায় নিজের মুখ না দেখে মিথ্যা ইতিহাস, অসাড় কৌশল নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। নিজেদের ব্যর্থতা ও পরাজয় বিবেচনায় নিচ্ছে না বিএনপি। দলটি বুঝতে পারছে না যদি নীতি-কৌশল পরিবর্তন না করে যদি একইভাবে অগ্রসর হতে থাকে তবে ৫ বছর পর নিজের পাতা অক্টোপাসের ফাঁদে নিজেই আরও বেশি করে আটকা পড়বে। সংসদের প্রথম অধিবেশনে মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের দিক বিবেচনায় নিয়ে বলেছেন, ‘কেউ যাতে আন্দোলনের নামে অরাজকতা সৃষ্টি করে মানুষের জানমাল ও জীবিকার ক্ষতিসাধন না করতে পারে, সেদিকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। সব গুজব ও অপপ্রচার বিষয়ে নজরদারি বৃদ্ধি করে জনগণকে সম্পৃক্ত রেখে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।’

একই সঙ্গে অর্থনৈতিক সংকট ও অনিশ্চয়তার বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘আর্থিক খাতের সংস্কার এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।’ বাস্তবে রাষ্ট্রপতি কথিত উল্লেখিত ‘হবে’গুলোকে বিবেচনায় নিয়ে সরকার যদি নির্বাচনী অঙ্গীকার অনুযায়ী সুশাসন ও কর্মসংস্থান সুনিশ্চিত এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার দিকে দেশকে এগিয়ে নিতে পারে, তবে আওয়ামী লীগ আরও চাঙ্গা হয়ে উঠবে। তখন আম-ছালা দুই-ই যাবে বিএনপির।

মন্তব্য লিখুন

জনপ্রিয় লেখা

ট্রেন মিস করা বিএনপির রাজনীতির গন্তব্য

আপডেটের সময় ০৮:১১:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

শেখর দত্ত

 

৭ জানুয়ারি ২০২৪ দ্বাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনের আগে বিএনপি ‘সরকার পতন’-এর একদফা সামনে রেখে যুদ্ধংদেহী উগ্রতা নিয়ে মাঠে নেমেছিল। নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি সামনে রাখলেও দলটি সেই সরকারের কোনো রূপরেখা জনগণের সামনে দিতে পারেনি। পারবে কেমন করে! সেই পদ্ধতিতে প্রথম পেরেক থেকে শেষ পেরেক পুঁতেছিল তো সেই দলই। প্রথম পেরেকটি পোঁতে ২০০১ সালের লতিফুর রহমানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আর শেষ পেরেক পুঁতেছে ২০০৬ সালে পুতুল ইয়াজউদ্দিন সরকারকে সামনে রেখে। এই বিষয়গুলো ধামাচাপা দিতেই বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা দেয়নি। দলটি নিয়মতান্ত্রিক পথে না গিয়ে যায় সরকার পতনের দাবি সামনে রেখে নির্বাচন ভণ্ডুলের সর্বনাশা লাইনে।

বিস্ময় ও হতবাক হওয়ার মতো বিষয় হচ্ছে, বিএনপির প্রধান নেতা তারেক রহমান, যাকে বলা হচ্ছে ‘দেশনায়ক’, তিনিই পালিয়ে রয়েছেন লন্ডনে। বহাল তবিয়তে সেখানে থেকে জনগণ ও নেতা-কর্মীদের মনমেজাজ না বুঝে আদেশ-নির্দেশে সর্বনাশা সব করতে তৎপর থেকেছেন। ফলে যা হবার তাই হয়েছে। বাস্তবে যে আগুনসন্ত্রাস দিয়ে বিএনপি নির্বাচন ভণ্ডুল করতে চেয়েছিল, সেই আগুনেই ২০১৪ সালের নির্বাচন-পরবর্তী সময়ের মতো এখন দগ্ধ হচ্ছে বিএনপি। এটা কার না জানা যে, সরকারকে গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে সরিয়ে জাতীয় ঐকমত্যের সরকার প্রতিষ্ঠা কিংবা বিদ্যমান বাস্তবতায় সংবিধান বহির্ভূত শক্তিকে ক্ষমতায় আনা যে কঠিনতম কাজ, তা নিজ কৃতকর্মে অভিযুক্ত ও শাস্তিপ্রাপ্ত তারেক রহমানের বুঝতে পারা সম্ভব ছিল না। শুরু থেকেই বিএনপির ‘দেশনায়ক’ রাজনীতিতে অপরিপক্ব, অবিবেচক ও অপরিণামদর্শী।

একটু খেয়াল করলেই স্মরণে আসবে যে, নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণার পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজি হাবিবুল আওয়াল বলেছিলেন, ‘নির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপিকে বার বার অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু দলটি রাজি হয়নি।… তবে বিএনপি নির্বাচনে যোগ দিতে চাইলে আগামী সংসদ নির্বাচন পুনঃতফসিল করা যেতে পারে।’ বিএনপি সেই অপশন গ্রহণ করেনি, নির্বাচন বয়কট করেছে। বিএনপি নেতৃত্বের ধারণা ছিল, একদিকে সমাবেশ আর অন্যদিকে নাশকতা যতটা করা যাবে, ততই বিদেশিরা নাক গলাবে। তাতে অস্থিরতা-অরাজকতা, অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করা সম্ভব হবে। নাশকতার বিষয়টি যেহেতু গোপন, তাই সরকারের ওপর দোষ চাপানোরও সুযোগ পাওয়া যাবে। ঘোলা পানিতে শিকার করা মৎসটা হবে তাদের!

বিএনপির আরও একটি হিসাবে বড় ভুল ছিল। বিএনপি মনে করেছিল, বয়কট করলে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে না। অপরদিকে নাশকতাজনিত ভয়ভীতিতে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে আসবে না। খুবই কম ভোট পড়বে। নির্বাচন হাস্যকর হবে। বিদেশিদের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না নতুন সরকার। স্বীকৃতি নিয়ে বিপাকে পড়বে। রাজনৈতিক সংকট শিখরে উঠবে। সেই সুযোগে বিএনপি আপসহীন শক্তিরূপে জনগণের হৃদয়মন জয় করে নেবে। বিধ্বস্ত বিএনপি নবরূপে রাজনীতির মাঠে আসর জেঁকে বসবে।

বিএনপির এই হিসাব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক চালে তছনছ করে দিয়েছেন। ধারণা করি দলে বিভক্তি-বিবাদ বাড়বে বিবেচনায় নিয়েও দলীয় নেতাদের বিদ্রোহী হয়ে দলের প্রতীকের বিরুদ্ধে নির্বাচন করার সুযোগ করে দিয়েছেন। রাজনীতিতে আশু লাভটাই বড়। ফলে এক ঢিলে দুই পাখি মরেছে। বিভিন্ন আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ভোট হওয়ায় বিএনপির হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিয়েছেন আর অন্যদিকে জনগণকে দিয়ে তৃণমূলে প্রকৃত জনপ্রতিনিধি বের করে এনেছেন। এই কৌশল গ্রহণের ভেতর দিয়ে দেশেরও লাভ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুঝিয়ে দিয়েছেন, জনগণের পক্ষে কাজ না করলে, জনগণ পক্ষে না থাকলে এমপি নির্বাচিত হওয়া অসম্ভব।

নির্বাচনের পরও বিএনপি নেতারা ‘পাগল’ নয়তো ‘শিশু’র মতো কথাবার্তা বলছেন, আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে যাচ্ছেন। কখনো মনে হচ্ছে কথা ও কাজ অবুঝ বালকের মতো, আবার কখনো মনে হচ্ছে প্রলাপ বকে চলেছেন, পাগলামি করছেন। নির্বাচনের পর দিন রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের অফিসে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান বলেছেন, আওয়ামী লীগের নাকি ‘নৈতিক পরাজয়’ হয়েছে! তিনি আরও বলেছেন, ‘সরকারকে বিদায় নিতে হবে।’ ‘কারও গায়ে হাত দেবে না বিএনপি’ এমন মন্তব্য করে বলেছেন, ‘জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক পন্থায় আন্দোলন চালিয়ে যাবে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো।’

বিএনপি নেতা যখন এসব বললেন তখন আওয়ামী লীগ ছিল বিজয়ের আনন্দে। বাস্তবে বিগত ১৫ বছরে দৃশ্যমান উন্নয়ন ও ডিজিটাল দেশ হওয়ার সুফল জনগণ পাচ্ছে বিধায় আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতা-কর্মী-সমর্থক ও জনগণ রয়েছেন সাফল্য ও অর্জনের আনন্দের চূড়ায়। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে শত চেষ্টা করেও বিএনপি নির্বাচন ভণ্ডুল করতে না পারায় ওই আনন্দ ছিল আকাশচুম্বি। বিজয়ী দূরদর্শী নেত্রী শেখ হাসিনা বিজয় মিছিল করতে যদি মানা না করতেন, তবে বিএনপি নেতৃত্ব দেখতে পারতেন, আওয়ামী লীগের ‘নৈতিক পরাজয়’ হয়েছে নাকি সত্যিকারের বিজয় হয়েছে। নৈতিক বিজয় দেখাতে বিজয় মিছিল করতে না দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা বিএনপিকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন।

বিএনপি বলছে দলটি ‘কারও গায়ে হাত’ দেয় না, ‘শান্তিপূর্ণভাবে সরকার পতনের আন্দোলন’ চালিয়ে যাবে। কথাটা শুনেই এমন প্রবাদ মনে পড়ে: ঠাকুর ঘরে কে রে আমি কলা খাই না। বলুন তো বিএনপি নেতারা, আপনাদের প্রতিষ্ঠাতা নেতা সেনাশাসক জিয়া ক্যু-পাল্টা ক্যু খেলায় কার কার গায়ে হাত দিয়েছিলেন, কতটা রক্ত ঝরিয়েছিলেন! হত্যা আর ক্যুয়ের রাজনীতির ধারা শুরু করেছিলেন তো তিনিই। অপর সেনা স্বৈরশাসক এরশাদবিরোধী যুগপৎ আন্দোলন ছিল হত্যা-ক্যু, প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অন্দোলন।

ওই আন্দোলনে শামিল থেকে বিএনপি সুযোগ পেয়েছিল জিয়ার হত্যা-ক্যু ও প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সামরিক শাসনের অপশাসনের প্রায়শ্চিত্ত করার। কিন্তু খালেদা জিয়া-তারেক জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে সক্ষম হয়নি। কেন না কয়লা ধুলেও ময়লা যায় না। পরবর্তীতে খালেদা জিয়ার আমলে লালবাগের সাত খুন এবং খালেদা-নিজামির শাসনামলে কিবরিয়া, আহসানউল্লাহ মাস্টারসহ রাজনীতিক-বুদ্ধিজীবী খুন হওয়ার ঘটনা আজও জনগণ ভুলে যায় নাই। কোটালীপাড়ায় বোমা পুঁতে রাখা হয়েছিল কেন? বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে গ্রেনেড হামলা? জননেত্রী শেখ হাসিনাকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে চেয়েছিল বিএনপি। তারেক-বাবর-সালাম জুটি তথা হাওয়া ভবনকে ভুলবে না জনগণ।

বলা হয়েছিল বাংলাভাই মিডিয়ার সৃষ্টি। বাংলাভাই আর মুফতি গংদের লেলিয়ে দিয়ে সিরিজ বোমা হামলা থেকে শুরু করে ব্রিটিশ হাইকমিশনারকে পর্যন্ত মারতে চেয়েছিল বিএনপি। ২০১৪ সালের নির্বাচন-পূর্ব সময়ে আন্দোলনের নামে আগুনসন্ত্রাসে কতজন প্রাণ হারিয়েছিলেন, তা মনে করুন না বিএনপি নেতারা! এখন আপনারা বলছেন কারও গায়ে হাত দেবেন না। মানবাধিকার-গণতন্ত্র নিয়ে চেঁচামেচি করছেন। বিদেশিদের উসকে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

বিএনপি দলটি প্রকাশ্যে বলেছে , ‘কারও গায়ে হাত দেবে না।’ ‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলবে।’ কিন্তু বাস্তবে বিএনপি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পথ ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সম্পূর্ণ পরিত্যাগ করেছে। সাংবিধানিক শাসন যখন বলবৎ থাকে, তখন বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের অর্থ দাঁড়ায় সংসদের ভেতরে-বাইরে আন্দোলন, ‘স্যাডো কেবিনেট’ গঠন করে সরকারের পাল্টা রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক কর্মসূচি প্রদান এবং ৫ বছর পরে নির্বাচনে অংশ নেওয়া। কিন্তু বিএনপি নীতি-কৌশল নিয়েছে, নির্বাচনের আগেই সরকারের পতন ঘটানো। এই অবস্থায় প্রশ্ন হলো, বিএনপি ‘মুখে শেখ ফরিদ বগলে ইট’ রাখছে না তো! ধারাবাহিক ব্যর্থতার প্রেক্ষাপটে বিএনপি যদি আগের মতোই রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে এগোতে থাকে, তবে তা হবে আগুন নিয়ে খেলারই নামান্তর।

বিগত ৬ ফেব্রুয়ারি বিএনপি রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে ‘সরকারের ব্যর্থতা’র তীব্র সমালোচনা করে বলেছে, সরকার নতজানু পররাষ্ট্র নীতি গ্রহণ করছে এবং তা স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হুমকির সম্মুখীন। এখানেও জিয়া ও খালেদা জিয়ার আমলের ইতিহাস ভুলে বিএনপি আগুন উসকে দিতে সচেষ্ট থাকছে। ইতিহাস বলে ১৯৭৮ সালে মিয়ানমার সেনা সরকার ‘বহিরাগত তাড়ানো’র নামে ‘অপারেশন কিং ড্রাগন’-এর মাধ্যমে হত্যা, ধর্ষণ, গ্রাম ধ্বংস, জমি কেড়ে নেওয়া প্রভৃতি শুরু করে। তখন নির্যাতিত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ শুরু করে। পরবর্তীতে ১৯৯১ সালে শুরু করে ‘অপারেশন ক্লিন অ্যান্ড বিউটিফুল’ অপারেশন। ৯ জুলাই ১৯৯২ দৈনিকগুলোর খরবে জানা যায় ২ লাখ ৭০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। অখাদ্য খেয়ে রোগে কত রোহিঙ্গা শরণার্থী মারা গিয়েছিল? ওই দুই সময়ে কারা ছিল ক্ষমতায়- বলুন না বিএনপি নেতারা!

সেনাশাসক জিয়া এবং প্রধানমন্ত্রী খালেদা তখন সফল নাকি ব্যর্থ ছিল! নতজানু পররাষ্ট্র নিয়ে কোনো কথা বিএনপির নেতাদের মুখে মানায় না। খালেদা জিয়ার প্রধানমন্ত্রিত্বকালে সেপ্টেম্বর ১৯৯২ ভারত শুরু করে ‘অপারেশন পুশব্যাক’। ২৯ সেপ্টেম্বর বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা এক বিবৃতিতে অপারেশন পুশব্যাক সম্পর্কে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। তখন কি করেছিল সরকার! নতজানু কতটুকু হয়েছিল, তা কি মনে করতে পারেন বিএনপি নেতারা! ক্ষমতায় থাকলে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব আর বিরোধী দলে থাকলে বিরোধিতা এবং এমনকি ‘ফেনী পর্যন্ত ভারত নিয়ে যাবে’ বলা কোন্ ধরনের দ্বিমুখীনতা!

বাস্তবে পাকিস্তানি আমলে পরিত্যক্ত ভাবাদর্শ নিয়ে গড়া দল বিএনপি নির্বাচনী ট্রেন মিস করে বিপদে পড়ে আয়নায় নিজের মুখ না দেখে মিথ্যা ইতিহাস, অসাড় কৌশল নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। নিজেদের ব্যর্থতা ও পরাজয় বিবেচনায় নিচ্ছে না বিএনপি। দলটি বুঝতে পারছে না যদি নীতি-কৌশল পরিবর্তন না করে যদি একইভাবে অগ্রসর হতে থাকে তবে ৫ বছর পর নিজের পাতা অক্টোপাসের ফাঁদে নিজেই আরও বেশি করে আটকা পড়বে। সংসদের প্রথম অধিবেশনে মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের দিক বিবেচনায় নিয়ে বলেছেন, ‘কেউ যাতে আন্দোলনের নামে অরাজকতা সৃষ্টি করে মানুষের জানমাল ও জীবিকার ক্ষতিসাধন না করতে পারে, সেদিকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। সব গুজব ও অপপ্রচার বিষয়ে নজরদারি বৃদ্ধি করে জনগণকে সম্পৃক্ত রেখে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।’

একই সঙ্গে অর্থনৈতিক সংকট ও অনিশ্চয়তার বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘আর্থিক খাতের সংস্কার এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।’ বাস্তবে রাষ্ট্রপতি কথিত উল্লেখিত ‘হবে’গুলোকে বিবেচনায় নিয়ে সরকার যদি নির্বাচনী অঙ্গীকার অনুযায়ী সুশাসন ও কর্মসংস্থান সুনিশ্চিত এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার দিকে দেশকে এগিয়ে নিতে পারে, তবে আওয়ামী লীগ আরও চাঙ্গা হয়ে উঠবে। তখন আম-ছালা দুই-ই যাবে বিএনপির।